QR code কি? কেন ব্যবহার করা হয়? কিভাবে কাজ করে? বিস্তারিত


আজকাল পার্সেল, বই, সফট ড্রিংক্স এর বোতল এমনকি টি-শার্টের উপরে QR code এর ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। এটি হচ্ছে এটি দ্বিমাত্রিক বা ২ডি ম্যাট্রিক্স বারকোড। যা আমাদের বহুল পরিচিত বারকোডের উন্নত সংস্করণ। এর মধ্যে লুকানো থাকে বিভিন্ন মেসেজ, নম্বর, সাইটের ইউ-আর-এল ইত্যাদি। তো আজ আমি আলোচনা করবো QR code কি? কেন ব্যবহার করা হয়? কিভাবে কাজ করে? ইত্যাদি নিয়ে।

QR code কি?

আপনি হয়তো বিভিন্ন পণ্যের মোড়কের উপর কালো বিন্দু দিয়ে তৈরি বর্গাকার একটি আবারণ দেখেছেন। এই কালো আবারণটি কি? এই কালো আবারণটিই কিউআর কোড নামে পরিচি। এর মধ্যে লুকানো থাকে বিভিন্ন মেসেজ, নম্বর, সাইটের ইউ-আর-এল ইত্যাদি। যা খালি চোখে পড়া যায় না। কিন্তু স্ক্যানার বা স্মার্টফোনের সাহায্যে অতী সহজেই এই কোডের মধ্যে থাকা তথ্য পড়া বা দেখা যায়।
QR code হচ্ছে এটি দ্বিমাত্রিক বা ২ডি ম্যাট্রিক্স বারকোড। কুইক রেসপন্স কোড এর সংক্ষেপ্ত রুপ। এটি ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম নকশা করে জাপানের জনপ্রিয় অটোমোবাইল কোম্পানি টয়োটার অধীনস্থ ডেনসো ওয়েব। QR code প্রথমে পুরো জাপান জুড়ে এবং পরবর্তিতে পুরো বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক জন প্রিয়তা লাভ করে।

QR code কেন ব্যবহার করা হয়?

নানাবিধ কারণে QR code ব্যবহার করা হয়। নিচে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ তুলে ধরা হলো।

সহজে কোন তথ্য আদান প্রদান করতেঃ

QR code ব্যবহার করে অতী সহজে যে কোন মেসেজ, নম্বর, সাইটের ইউ-আর-এল ইত্যাদি আদান প্রদান করা যায়। এতে অতী সহজে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় তথ্য আদান প্রদান করা সম্ভব। এবং শুধু আদান প্রদান না সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সাথে তথ্য আদান প্রদান করা যায়।

কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে তথ্য জানাতেঃ

পণ্য বা সেবা উৎপাদনকারী কোম্পানি ব্যবহারকারী বা ভোক্তার কাছে তার পন্য বা সেবা সম্পর্কে QR code ব্যবহার করে সহজেই অনেক তথ্য তুলে ধরতে পারেন। যাতে ব্যবহারকারী বা ভোক্তা QR code স্ক্যান করে সহজেই অই পণ্য সম্পর্কে অনেক তথ্য পেতে পারেন এবং অই পণ্য তার উপযোগী কিনা তা বিচার করতে পারেন।

পন্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণ করতেঃ

অনেক অসাধু ব্যাবসায়ী অধিক মুনফা লাভের উদ্দেশ্যে ভোক্তার কাছ থেকে অনেক বেশি মূল্য নিয়ে থাকেন। কিন্তু যদি অই পণ্যের গায়ে QR code থাকে এবং ভোক্তা যদি QR code স্ক্যান করতে পারেন। তাহলে ভোক্তা অতী সহজে পণ্যের সঠিক দাম জানতে পারবেন এবং প্রতারিত হবেন না।

প্রচার প্রচারণা বা বিজ্ঞাপণেঃ

ব্যবসার প্রচার প্রচারণা করতে এবং বিপণন ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে QR code এর ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ব্যাবসায় সচ্ছতা নিশ্চিত করতেও QR code ব্যবহার করা হয়। পণ্য আসল না নকল তা নির্নয় করতে QR code ব্যাবহৃত হয়।

লিংক শেয়ার করতেঃ

প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে হর হামেসা লিংক শেয়ার হচ্ছে। আর QR code লিংক শেয়ার করার অন্যতম একটি মাধ্যম। যার সাহায্যে অতি সহজে কোন ঝামেলা ছাড়াই নিরাপত্তার সাথে যেকোন লিংক শেয়ার করা যায়। এবং যাস্ট স্ক্যানের মাধ্যমে লিংক ভিজিট করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

QR code ব্যবহারের সুবিধাঃ

QR Code ব্যবহারে অন্যতম কারণ এর দ্রুততা। যার প্রয়োজন সে তার হাতে থাকা স্মার্টফোন ব্যবহার করে সহজেই মূহূর্তেই ডিকোড করে তার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। QR code ব্যবহারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ তুলে ধরা হলো।

অনেক তথ্য রাখা যায়ঃ

সাধারনত বারকোডে যে পরিমানে তথ্য রাখা যায় QR code এ তার থেকে অনেক বেশি তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। বারকোডে ১০ থেকে ১২ টি সংখ্যা সংরক্ষিত থাকে। যদিও এই ১০ থেকে ১২ টি সংখ্যা একটি প্রডাক্ট চিনতে যথেষ্ট কিন্তু তারপরও এই ১০ থেকে ১২ টি সংখ্যা দিয়ে অনেক কাজ (যেমনঃ প্রডাক্টের বিস্তারিত বর্ণনা, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ভিজিট ইত্যাদি) করা যায় না। সাধারনত একটি QR code ২০০০ ক্যারেক্টারের কোন তথ্যকে খুব সহজে চিত্রিত করতে পারে।

সহজে তথ্য নষ্ট হয় নাঃ

সাধারনত বার কোডের কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলে এর মধ্যে থাকা কোন তথ্য পাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে বা পাওয়াই যায় না। কিন্তু QR code এর কিছু অংশ নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। কারণ একই তথ্য আলাদা ফর্মে একাধিকবার সেভ করা থাকে। তাই QR code এ থাকা তথ্য সহজে নষ্ট হয় না।

দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা যায়ঃ

বার কোডে তথ্য সংগ্রহ করতে অনেক সময় লাগত। কিন্তু বর্তমানে QR code এর তথ্য সংগ্রহ করা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। আর QR code এর তথ্য সংগ্রহ করতে কোন আলাদা স্ক্যানারের প্রয়োজন নাই। আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন ব্যবহার করে যাস্ট কয়েক সেকেন্ডে QR code এ থাকা তথ্য সংগ্রহ করা যায়। যদিও QR code এ অনেক তথ্য থাকে তার পরও এর তথ্য পড়তে তেমন সময় লাগে না।

তথ্য আদান প্রদান সহজঃ

QR code অতি সহজে মেসেজের মাধ্যমে আদান প্রদান করা যায়। এবং দ্রুততর সময়ে আদান প্রদান করা যায়। আদান প্রদান করার জন্য কোন স্পেশাল কিছু দরকার হয় না। যাস্ট সাধারন পদ্ধতিতে আদান প্রদান করা যায়।

নিরাপত্তার সাথে তথ্য আদান প্রদানঃ

যেহেতু QR code কেউ খালি চোখে পড়তে পারে না। সেহেতু এর ভিতর থাকা তথ্য অনেক সিকিউর থাকে। এবং এর ভেতরে সংরক্ষিত ডাটা গুলো ইনক্রিপটেড করে রাখা সম্ভব তাই এটি সাধারন বারকোড থেকে আরো বেশি নিরাপদ আরো বেশি সুরক্ষিত।


© Md Sohan

Post a Comment

0 Comments